কাঁকড়া খাওয়ার হুকুম

প্রশ্ন:
কাঁকড়া খাওয়া জায়েজ কিনা?

উত্তর:
بسم اللّٰه الرحمن الرحيم 
কাঁকড়া খাওয়ার শরয়ী বিধান বা হুকুম:
হানাফী মাযহাবে কাঁকড়া খাওয়া জায়েয নেই। কেননা, জলজ প্রাণীর মধ্য থেকে মাছই একমাত্র উৎকৃষ্ট হালাল বস্তু, আর বাকিগুলো ঘৃণিত বস্তু বিধায় জলজ প্রাণীর মধ্য থেকে মাছ ছাড়া অন্য কোনো প্রাণী খাওয়া জায়েয নেই। (তাকমিলাতু ফাতহিল মুলহিম ৩/৫১১)

প্রমাণসমূহ:
১.এগুলো কোরআনে বর্ণিত ‘খাবায়েস’ (ঘৃণিতবস্তু) এর অন্তর্ভুক্ত।
وَيُحَرِّمُ عَلَيهِمُ الخَبائِثَ

‘খাবায়েস নিষিদ্ধ‘। (আল আরাফ- ১৫৭)।

‘খাবায়েস’ বলা হয়,

كل ما يستخبثه الطبع

অর্থাৎ, যা মানুষ স্বভাবত ঘৃণা করে। আর মাছ ছাড়া অন্যান্য জলজ প্রাণীকে মানুষ স্বভাবতই ঘৃণা করে। সুতরাং সেগুলোও নিষিদ্ধ।

২.আবদুল্লাহ ইবনে উমর রাযি. থেকে বর্ণিত,

أحلت لنا ميتتان ودمان فأما الميتتان فالحوت والجراد وأما الدمان فالكبد والطحال

রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের জন্য দু’ প্রকারের মৃত জীব ও দু’ ধরনের রক্ত হালাল করা হয়েছে। মৃত জীব দু’টি হলো মাছ ও টিড্ডি এবং দু’ প্রকারের রক্ত হলো কলিজা ও প্লীহা। (ইবনে মাজাহ ৩৩১৫, মুসনাদে আহমাদ ৫৬৯০, দারাকুতনী ৪৬৮৭, শরহুস সুন্নাহ ২৮০৩)

এ ব্যাপারে চার মাযহাব একমত,যে জলজ প্রাণী জীবিত হালাল,তা অস্বাভাবিকভাবে মারা গেলেও হালাল।অথচ এ হাদিসে স্পষ্ট আছে যে,মৃত জলজ প্রাণীর মধ্যে শুধু মাছ আর মৃত স্থলজ প্রাণীর মধ্যে শুধু টিড্ডি হালাল।

সুতরাং কাঁকড়াকে হালাল বলতে হলে জীবিত ও মৃত উভয়টাকেই হালাল বলতে হবে।কিন্তু এটাতো উপরিউক্ত হাদিসের সাথে সাংঘর্ষিক। 

৩.এ ধরণের জলজ প্রাণী রাসূলুল্লাহ ﷺ ও সাহাবায়ে কেরাম খেয়েছেন বলে প্রমাণ পাওয়া যায় না। অধিকন্তু হাদীসে এসেছে,

انَّ طَبِيبًا سَأَلَ النَّبِيَّ ﷺ عَنْ ضِفْدَعٍ يَجْعَلُهَا فِي دَوَاءٍ فَنَهَاهُ النَّبِيُّ ﷺ عَنْ قَتْلِهَا

অর্থাৎ, আব্দুর রহমান বিন উসমান রাযি. থেকে বর্ণিত আছে যে, রসূলুল্লাহ ﷺ জনৈক চিকিৎসককে ব্যাঙ মেরে ওষুধ বানাতে নিষেধ করেছিলেন। (আবু দাউদ ৩৮৭১)। অথচ ব্যাঙ জলজ প্রাণী!
এ হাদিস থেকে বুঝা যায় যে,সব জলজ প্রাণী হালাল নয়।অথচ অন্যান্য মাযহাবে সব জলজ প্রাণী হালাল।
والله أعلم بالصواب
Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url