বিড়াল পোষা ও নিউটার করার বিধান
প্রশ্ন:
বিড়াল পোষা ও নিউটার করার বিধান কি?
উত্তর:
بسم اللّٰه الرحمن الرحيم
বিড়াল পোষার বিধান:
বিড়াল পোষা জায়েজ আছে।বিশিষ্ট সাহাবী আবূ হুরায়রা রা. বিড়াল পোষতেন এবং নিজের কাছে রাখতেন।এজন্যই রাসূল صلى اللّٰه عليه وسلم একদা "আবূ হুরায়রা তথা বিড়ালওয়ালা" বলে ডাক দিয়েছিলেন।এরপর থেকে তিনি এ নামেই প্রসিদ্ধ হয়ে গেছেন।তবে বিড়ালকে কষ্ট দেওয়া যাবে না এবং নিয়মিত খাবার দিতে হবে।যেমন,হাদিস শরীফে এসেছে,
حَدَّثَنِيْ عَبْدُ اللهِ بْنُ مُحَمَّدِ بْنِ أَسْمَاءَ حَدَّثَنَا جُوَيْرِيَةُ بْنُ أَسْمَاءَ عَنْ نَافِعٍ عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ عُذِّبَتْ امْرَأَةٌ فِيْ هِرَّةٍ سَجَنَتْهَا حَتَّى مَاتَتْ فَدَخَلَتْ فِيْهَا النَّارَ لَا هِيَ أَطْعَمَتْهَا وَلَا سَقَتْهَا إِذْ حَبَسَتْهَا وَلَا هِيَ تَرَكَتْهَا تَأْكُلُ مِنْ خَشَاشِ الأَرْضِ
আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত। আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, এক নারীকে একটি বিড়ালের কারণে আযাব দেয়া হয়েছিল। সে বিড়ালটিকে বেঁধে রেখেছিল। সে অবস্থায় বিড়ালটি মরে যায়। মহিলাটি ঐ কারণে জাহান্নামে গেল। কেননা সে বিড়ালটিকে খানা-পিনা কিছুই করাইনি এবং ছেড়েও দেয়নি যাতে সে যমীনের পোকা-মাকড় খেয়ে বেঁচে থাকত। (সহীহ বুখারী ৩৪৮২)
বিড়ালকে নিউটার বা স্পে করার হুকুম :
উল্লেখ্য যে, স্পে ও নিউটার ছোট এক ধরনের অস্ত্রোপচার যার মাধ্যমে পশুচিকিৎসক বিড়ালের প্রজননতন্ত্র ফেলে দেন। ফলে তারা বংশবৃদ্ধি করতে পারে না। (মেয়ে বিড়ালের অস্ত্রোপচারকে বলে স্পে আর ছেলে বিড়ালের অস্ত্রোপচারকে বলে নিউটার)।
শখের বশে কিংবা একান্ত প্রয়োজন ব্যতীত বিড়ালকে নিউটার করা বৈধ নয়।যেমন,হাদিস শরীফে এসেছে,
عن ابن عمر رض قال: نهى رسول اللّٰه صلى اللّٰه عليه وسلم عن إخصاء الخيل و البهائم.(مسند الإمام أحمد ٤٧٦٩)
অর্থ-হযরত ইবনে ওমর রা. হতে বর্ণিত,তিনি বলেন: রাসূল صلى اللّٰه عليه وسلم ঘোড়া ও অন্যান্য পশুকে খাসি করতে নিষেধ করেছেন।মুসনাদে আহমদ ৪৭৬৯
তবে গরু,ছাগল ইত্যাদি খাসি করা বৈধ।কেননা এতে বিশেষ উপকারিতা রয়েছে তথা গোশত সুস্বাদু হওয়া এবং মোটাতাজা হওয়া।যেমন,হাদীস শরীফে আম্মাজান আয়েশা ও আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত-
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ ـ صلى الله عليه وسلم ـ كَانَ إِذَا أَرَادَ أَنْ يُضَحِّيَ اشْتَرَى كَبْشَيْنِ عَظِيمَيْنِ سَمِينَيْنِ أَقْرَنَيْنِ أَمْلَحَيْنِ مَوْجُوءَيْنِ فَذَبَحَ أَحَدَهُمَا عَنْ أُمَّتِهِ لِمَنْ شَهِدَ لِلَّهِ بِالتَّوْحِيدِ وَشَهِدَ لَهُ بِالْبَلاَغِ وَذَبَحَ الآخَرَ عَنْ مُحَمَّدٍ وَعَنْ آلِ مُحَمَّدٍ ـ صلى الله عليه وسلم.
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কুরবানীর ইচ্ছা করলে দু’টি মোটাতাজা, মাংসল, শিংযুক্ত, ধূসর বর্ণের ও খাসিকৃত মেষ ক্রয় করতেন। অতঃপর এর একটি নিজ উম্মতের (যারা আল্লাহর একত্বের সাক্ষ্য দেয় এবং তাঁর নবুয়তের সাক্ষ্য দেয় তাদের) পক্ষ থেকে এবং অপরটি মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর পরিবারবর্গের পক্ষ থেকে কোরবানী করতেন। (সুনানে ইবনে মাজাহ ৩১২২; মুসনাদে আহমদ ২৫৩১৫, ২৫৩৫৮)
والله تعالىٰ أعلم بالصواب
উত্তর প্রদানে-
মুফতী হোসাইন আহমদ
মুশরিফ,ফতোয়া বিভাগ
ইসলামী দাওয়াহ সেন্টার সাইনবোর্ড