পশম বা সুতার মোজা এবং বুট জুতায় মাসেহ করার হুকুম কি?
প্রশ্ন:
পশম বা সুতার মোজা এবং বুট জুতায় মাসেহ করার হুকুম কি?
উত্তর:
بسم اللّٰه الرحمن الرحيم
চামড়ার মোজা,পশম বা সুতার মোজা এবং বুট জুতার উপর মাসেহের হুকুম:
১.চামড়ার মোজা:
চামড়ার মোজার উপর সর্বসম্মতভাবে মাসেহ করা জায়েজ।এতে কোন মুজতাহিদগণের মাঝে মতভেদ নেই।
ইমাম আবূ হানীফা রহ. বলেছেন, আমি ততক্ষণ পর্যন্ত মোজার উপর মাসাহের প্রবক্তা হইনি, যতক্ষণ পর্যন্ত না বিষয়টি আমার কাছে দিবালোকের ন্যায় পরিস্কার হয়েছে। তার থেকে আরো বর্ণিত যে, তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি মোজার উপর মাসাহ করাকে অস্বিকার করে, তার ব্যাপারে কুফরীর ভয় করি। কেননা, এ বিষয়ক বর্ণনা মুতাওয়াতির পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
ইমাম আহমাদ রহ. বলেছেন, মোজার উপর মাসেহ বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই, কারণ এ বিষয়ে নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে চল্লিশটি হাদীস বর্ণিত হয়েছে।যার কিছু মারফূ ও কিছু মাওকুফ [আলবাহরুর রায়েক-১/২৮৮, জাকারিয়া বুক ডিপো]
২.পশম বা সুতার মোজা এবং বুট জুতা:
পশম বা সুতার যেসব মোজা সচরাচর পাওয়া যায় এর উপর মাসেহ সহীহ নয়।কেননা, এগুলোতে চামড়ার মোজার বৈশিষ্ট্যাবলী পাওয়া যায় না।অপরদিকে বুট জুতার উপর মাসেহ সহীহ হবে।কারণ,এগুলোতে চামড়ার মোজার শর্তগুলো বিদ্যমান।শর্তগুলো হচ্ছে :
- ক) মোজা এমন মোটা ও পুরু হওয়া যে, জুতা ছাড়া শুধু মোজা পায়ে দিয়ে তিন মাইল পর্যন্ত হাঁটা যায়। এতে মোজা ফেটে যায় না এবং নষ্টও হয় না।
- খ) পায়ের সাথে কোনো জিনিস দ্বারা বাঁধা ছাড়াই তা লেগে থাকে এবং তা পরিধান করে হাঁটা যায়।
- গ) মোজা এমন মোটা যে, তা পানি চোষে না এবং তা ভেদ করে পানি পা পর্যন্ত পৌঁছায় না।
- ঘ) তা পরিধান করার পর মোজার উপর থেকে ভিতরের অংশ দেখা যায় না।
- ঙ)পায়ের যতটুকু অংশ অজুতে ধোয়া ফরজ ততটুকু টাখনুসহ ঢাকা থাকা।
জামে তিরমিযী ১/১৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/৮৩; আলবাহরুর রায়েক ১/১৮২; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৬৯; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩৪৩-৩৪৪; ফাতহুল কাদীর ১/১৩৮; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ১২০; মাজমাউল আনহুর ১/৭৫; আননাহরুল ফায়েক ১/১২৩
والله أعلم بالصواب
উল্লেখ্য যে, এখানে তিন মাইল দ্বারা উদ্দেশ্য হলো শরয়ী ৩ মাইল তথা ৫.৪৮৬ কি.মি.।