পরচুলা ব্যবহার ও হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের বিধান

প্রশ্ন:

পরচুলা ব্যবহার ও হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের বিধান কি?

উত্তর :

بسم اللّٰه الرحمن الرحيم 

মানুষের চুল পরচুলা হিসাবে ব্যবহারের বিধান:

মহিলাদের জন্য কোনো মানুষের চুল পরচুলা হিসাবে ব্যবহার করা নাজায়েয। হাদীস শরীফে এ ব্যাপারে কঠিন ধমকি এসেছে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

لَعَنَ اللَّهُ الوَاصِلَةَ وَالمُسْتَوْصِلَةَ

আল্লাহ তাআলা লা‘নত করেন ঐ নারীর প্রতি যে (অন্য নারীকে) চুল লাগিয়ে দেয় এবং যে নারী নিজে চুল লাগায়। (সহীহ বুখারী, হাদীস ৫৯৩৩)

কৃত্রিম চুল বা পশুর চুল ব্যবহারের বিধান:

পরচুলা যদি কোনো মানুষের চুল না হয়ে শুকর ব্যতীত কোনো পশুর হয় অথবা কৃত্রিম চুল হয় তাহলে তা ব্যবহার করা অবৈধ নয়।

আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. বলেন,

لاَ بَأْسَ بِالْوِصَالِ إِذَا كَانَ صُوفًا

পশম দিয়ে তৈরি পরচুলা ব্যবহার করতে সমস্যা নেই। (মুসান্নাফে ইবনে আবী শাইবা ২৫৭৪৩)

সুনানে আবু দাউদের বর্ণনায় এসেছে সাঈদ ইবনে যুবায়ের রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- لَا بَأْسَ بِالْقَرَامِلِ

‘করমাল’ ব্যবহারে কোনো সমস্যা নেই। (হাদীস ৪১৬৮)

‘করমাল’ আরবী শব্দ। অর্থ হল রেশম বা পশমের সুতা দিয়ে তৈরি কেশগুচ্ছ যা মহিলারা চুলের সাথে যুক্ত করে ব্যবহার করে।

উল্লেখ্য যে,কৃত্রিম চুল ব্যবহার করার দ্বারা যদি প্রতারণা উদ্দেশ্য থাকে,তাহলে তা বৈধ হবে না।  

হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের বিধান:

চুল পড়া বা টাকের একটি আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি হেয়ার ট্রান্সপ্ল্যান্ট বা চুল প্রতিস্থাপন।দেহের অন্যান্য অঙ্গের (যেমন কিডনি, চোখ) মতো চুলও প্রতিস্থাপন করা সম্ভব।এক্ষেত্রে মাথার এক অংশ থেকে চুল নিয়ে অন্য অংশে লাগিয়ে দেওয়া হয়।বিশেষ প্রয়োজনে  (যেমন- কোনো ব্যক্তির টাক থাকায় তিনি সামাজিকভাবে বা পারিবারিকভাবে অবজ্ঞার স্বীকার হচ্ছেন)এ পদ্ধতি গ্রহণ করার অবকাশ রয়েছে। 

তবে প্রতারণার উদ্দেশ্যে কিংবা মানুষের আলগ চুল দিয়ে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টের সুযোগ নেই।

 চুল গজানোর ঔষধ ব্যবহারের বিধান:

প্রাকৃতিকভাবে মাথার চুল গজানো কিংবা চুল বড় করার জন্য যেকোনো চিকিৎসা বা ওষুধ নিতে কোনো সমস্যা নেই।চোখের দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে অথবা শারীরিক শক্তিবৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন ওষুধ নেওয়া যেমন জায়েজ আছে তদ্রূপ এটিরও অনুমতি রয়েছে।

রাদ্দুল মুহতার ৬/৩৭২; বাযলুল মাজহুদ ১৭/৫৮

وفي تكملة فتح الملهم ٤/ ١٦٥،كتاب اللباس

وقد دل الحديث على أن وصل المرأة شعرها كبيرة تستحق اللعن.وقد اختلف العلماء في تفصيل هذا الحكم على أقوال

١- يحرم الوصل مطلقا، سواء كان بشعر آدمي أو شعر غير آدمي، وسواء كان بخرقة أو صوف، وهذا القول جعله النووي الظاهر المختار، وهو الذي ذكره الحافظ في الفتح كمذهب الجمهور

٢- الوصل بشعر الآدمي حرام، وكذلك الوصل بشعر نجس من غير الآدمي، وأما الشعر الطاهر من غير الآدمي فيجوز الوصل به بإذن الزوج أو السيد، وهو قول لبعض الشافعية كما حكى عنهم النووي

٣- الوصل بالشعر ممنوع مطلقا، سواء كان بشعر الآدمي أو بشعر حيوان، ولكن لا بأس بوصله بصوف أو خرق وغيرها، وهو قول الليث بن سعد

٤- الوصل بغير الشعر إنما يحل إذا لم يلتبس بالشعر بحيث لا يظن الناظر أنه من الشعر، أما إذا وقع به الالتباس فلا. وهو الذي قواه الحافظ في الفتح(١٠: ٣٧٥)

والذي يظهر من كتب الحنفية أن الراجح عندهم القول الثاني، وهو تخصيص الحرمة بشعر الآدمي

وفي الاختيار لتعليل المختار ٤/ ١٤١،كتاب الكراهية

قال: (و وصل الشعر بشعر الآدمي حرام) سواء كان شعرها أو شعر غيرها

وفي فتاوى قاضيخان ٣/ ٣١٧،كتاب الحظر و الإباحة

ولا بأس للمرأة أن تجعل في قرونها وذوائبها شیئا من الوبر

والله تعالىٰ أعلم بالصواب

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url