সূরা ফাতিহা কেরাত কিনা?

প্রশ্ন:

"ইমামের কেরাত মুক্তাদির জন্য যথেষ্ট" এই হাদিসের জবাবে কিছু ভাইকে বলতে শুনা যায় যে,সূরা ফাতিহা কেরাত নয়।কথাটি সঠিক কিনা?

উত্তর :

بسم اللّٰه الرحمن الرحيم 

সূরা ফাতিহা কুরআনে কারীমের একটি সূরা। এটি স্বীকৃত বাস্তবতা। সুতরাং তা পাঠ করা তো অবশ্যই কিরাত। কারণ এখানে কিরাতের অর্থ হল- কুরআন পড়া। ফাতিহা যেহেতু কুরআনেরই একটি সূরা তাই ফাতিহা পড়া কিরাত (কুরআন পড়া) হবে না কেন? বিষয়টি এত স্পষ্ট যে, এর জন্যে দালীলিক আলোচনার প্রয়োজন পড়ে না।তবু আমরা এখানে কিছু হাদীস উল্লেখ করছি, যাতে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে যে, সূরা ফাতিহা পড়াও ‘কিরাত’-এর অন্তর্ভুক্ত।

(১) হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন-

كان رسول الله صلى الله عليه وسلم يستفتح الصلاة بالتكبير والقراءةَ بالحمد لله رب العالمين

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকবীরের মাধ্যমে নামায শুরু করতেন এবং ‘আল-হামদু লিল্লাহি রাবিবল আলামীন’-এর মাধ্যমে কিরাত শুরু করতেন।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৪৯৮; সুনানে আবু দাউদ, হাদীস ৭৭৯; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৫০৭; মুসনাদে আহমদ ৬/৩১

(২) হযরত আবু হুরাইরা রা. হতে বর্ণিত তিনি বলেন-

كان رسول الله صلى الله عليه وسلم إذا نهض من الركعة الثانية استفتح القراءة بالحمد لله رب العالمين

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যখন দ্বিতীয় রাকাত থেকে উঠে দাঁড়াতেন তখন ‘আল-হামদু লিল্লাহি রাবিবল আলামীন’-এর মাধ্যমে কিরাত শুরু করতেন।’ -সহীহ মুসলিম, হাদীস ৫৯৯; সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস ৮১৪; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস ১৯৬৩

(৩) হযরত আনাস রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন-

كان رسول الله صلى الله عليه وسلم وأبو بكر وعمر يستفتحون القراءة بالحمد الله رب العالمين

‘রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবু বকর এবং উমর রা. ‘আলহামদুলিল্লাহি রাবিবল আলামীন’-এর মাধ্যমে কিরাত শুরু করতেন।’ -ইমাম বুখারী, জুযউল কিরাআত খালফাল ইমাম, হাদীস ৭৭৮; সুনানে নাসাঈ, হাদীস ৯০২; ইবনে মাজাহ, হাদীস ৫০৮; মুসনাদে আহমাদ ৩/১০১

(৪) হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মুগাফফাল রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন-

صليت خلف النبي صلى الله عليه وسلم وأبي بكر وعمر وعثمان رضي الله عنهم يستفتحون القراءة بالحمد لله رب العالمين

আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবু বকর, উমর ও উসমান রা.-এর পিছনে নামায আদায় করেছি। তাঁরা প্রত্যেকেই ‘আল-হামদু লিল্লাহি রাবিবল আলামীন’-এর মাধ্যমে কিরাত শুরু করতেন।’ -ইমাম বুখারী, জুযউল কিরাআত খালফাল ইমাম, হাদীস ১৩০

উপরিউক্ত সহীহ হাদীসগুলোতে সূরা ফাতিহা পড়াকে কিরাত বলা হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও খোলাফায়ে রাশেদীন থেকে প্রমাণিত হল যে, সূরা ফাতিহা পড়াও কিরাত।  এরপরও কি আমাদের ঐ ভাইয়েরা বলবেন- সূরা ফাতিহা পড়া কিরাত নয়?!

الله تعالىٰ أعلم بالصواب

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url